বনানীতে যুবলীগ নেতা সোহেলের দেহরক্ষীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

রাজধানীর বনানী থানা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইউসুফ সর্দার ওরফে সুন্দরী সোহেলের দেহরক্ষী কাজী রাশেদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রোববার সকাল ৭টায় বনানীর আমতলী এলাকায় জলখাবার হোটেলের পেছনের গলি থেকে পুলিশ রাশেদের লাশ উদ্ধার করে বলে যুগান্তরকে নিশ্চিত করেন বনানী থানার এসআই মো. শাহীন আলম।

তিনি বলেন, নিহত কাজী রাশেদ আমতলী এলাকার মো. আবুল হোসেনের ছেলে। খবর পেয়ে সকালে তার লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এসআই বলেন, রাশেদকে কারা কেন হত্যা করেছে, এ ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। নিহত রাশেদের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে রাশেদের বাবা বাবুল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আমার ছেলে হত্যার পর মহাখালীতে বনভবনের পাশের ওই যুবলীগের অফিসে তালা দিয়ে বনানী থানা যুবলীগ নেতা সোহেল তার অন্য সহযোগীসহ এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।

পুলিশ গিয়ে ওই যুবলীগ অফিসের সব সিসি ক্যামেরা বন্ধ পেয়েছে বলে জানান আবুল হোসেন। এতেই তার সন্দেহ হয় তার কাছের লোকজনই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গা ঢাকা দিয়েছে।

অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সুন্দরী সোহেল বনানীর ডন হিসেবে পরিচিত। এর আগে মধ্যরাতে রিকশা ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডার জের ধরে এক হতদরিদ্র রিকশাচালককে গুলি করে সংবাদের শিরোনাম হন তিনি। এ ঘটনায় তাকে গ্রেফতারও করেছিল বনানী থানা পুলিশ। পরে অবশ্য জামিনে মুক্তি পান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র জানায়, সোহেল অস্ত্র ছাড়া চলাফেরা করেন না। লাইসেন্স করা অত্যাধুনিক শটগান ও বিদেশি পিস্তল তার সার্বক্ষণিক সঙ্গী। এ কারণে তাকে লাইসেন্সধারী সন্ত্রাসী বললেও ভুল বলা হবে না।

অস্ত্র ছাড়াও তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী রয়েছে, যে বাহিনী দিয়ে তিনি রাজধানীর গুলশান, বনানী ও মহাখালী এলাকায় টেন্ডার, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা করে আসছেন। মদ্যপান করে গুলশান-বনানী ও মহাখালী এলাকায় হট্টগোল ও তাণ্ডব চালানো তার পুরনো অভ্যাস। মাতাল অবস্থায় যাকে তাকে গুলি করাও তার অন্যতম শখ।

পুলিশের খাতায় অপরাধী হিসেবে সুন্দরী সোহেলের নাম তালিকাভুক্ত হয় ২০০৫ সালে। এ সময় বাড্ডার ফোর মার্ডারের ঘটনায় সোহেলের নাম সামনে চলে আসে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডে নিহত হন রাজধানীর অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী আলামিন ওরফে আলা।

আলা নিহত হওয়ার পর পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড়ের মুখে সোহেল সাউথ আফ্রিকায় পালিয়ে যান। সেখানে টানা চার বছর পলাতক থাকার পর তিনি দেশে ফেরেন। দেশে ফিরেই আবার বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment